ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু মদের বিষক্রিয়ায় নাকি দুর্ঘটনা!!

বিজয় বিডি ডেস্ক : ফরিদপুরে ছাত্রলীগের এক নেতার মৃত্যুর কারণ নিয়ে চিকিৎসক ও সংগঠনের পক্ষ থেকে দুই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব মারা যান।
চিকিৎসক বলছেন, অ্যালকোহলের বিষক্রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন রাকিব। তার পাঁচ ঘণ্টা পরই তিনি মারা যান।
আর রাকিব সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন এমন দাবি করে তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।
রাকিবের মৃত্যুর বিষয়টি মঙ্গলবার জানাজানি হয়। তিনি বোয়ালমারী উপজেলার বেলজানি গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য শরিফুল ইসলামের ছেলে। তারা দুই ভাই, এক বোন। ময়নাতদন্ত শেষে সকাল ১১টায় খরসুতি ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে পাশের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ স্বাক্ষরিত শোক বার্তায় বলা হয়, ছাত্রলীগ ফরিদপুর জেলা শাখার সহসভাপতি রাকিবুল ইসলাম আজ (সোমবার) বিকাল আনুমানিক ৩টা ৩০ মিনিটে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাকিবুল ইসলামের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের এ বিবৃতির পর বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর শহরে আলোচনা সৃষ্টি হয়।
হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাকিবকে সোমবার সকাল ৯টা ১০ দিকে ৪২৭৮৩/২৩ সিরিয়ালে বন্ধু পরিচয়ে আবির নামে এক তরুণ এসে ভর্তি করেন। ভর্তির জায়গায় ‘পুলিশ কেস’ সিল মারা ছিল। ভর্তি করতে আসা আবির জানান, বমির প্রবণতা থাকায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
এরপর আবিরের আর কোনো সন্ধান পায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীর নিবন্ধন খাতায় যে মোবাইল ফোন নাম্বারটি দেওয়া ছিল সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “বমির কথা বলে রাকিবুলকে ভর্তি করা হলেও তার সমস্যা ছিল অ্যালকোহলজনিত বিষক্রিয়া। তাকে দ্রুত আইসিইউতে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।
ওই হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আতিয়ার রহমান বলেন, এটি একটি পুলিশ কেস। এজন্য রাকিবুলের মৃত্যুর পর যাবতীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে জানানো হয়েছে।
তবে ফরিদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, বিষয়টি আমাদের কাছে আসেনি।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানমজীদুল রশিদ ওরফে রিয়ান বলেন, তার জানা মতে রাকিবুল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। অ্যালকোহলজনিত জনিত মৃত্যুর ব্যাপারে তার কিছু জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, রাকিবুলকে তিনি চেনেন না। কেন্দ্র কমিটি অনুমোদন করার সময় তার নাম কলম দিয়ে হাতে লিখে দিয়ে অনুমোদন করা হয়।