প্রধানমন্ত্রীর নিকট মৃত্যুশায়ী মুক্তিযুদ্ধা জেহাদীর আকুল আবেদন (ভিডিও সহ)

বিশেষ সংবাদদাতাঃ তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিএনপি নেতা আইউব মিয়াজির নেতৃত্বে পরিকল্পিত হামলায় মৃত্যুশায়ী বীর মুক্তিযুদ্ধা জেহাদী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধিন রয়েছেন। চিকিৎসা অবস্থায় তিনি সাংবাদিক সহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের নিকট হামলাকারীদের পরিচয় তুলে ধরেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন। মৃত্যুশায়ী মুক্তিযুদ্ধা জেহাদীর অভিযোগ পাঠকদের জন্য ভিডিও সহ হুবহু তুলে ধরা হল । প্রধানমন্ত্রী জননেত্রীর নিকট অকুল আবেদন। আমি আবুল কালাম আজাদ মোল্লা, একজন যুদ্ধাহতো মুক্তিযোদ্ধা। সন্ত্রাসীরা আমার নিকট চাঁদা দাবি করলে আমি চাঁদা না দেয়ায়
রাতের অন্ধকারে ঘরের ভিতরে ঢুকে আমাকে বের করে কুপিয়ে হত্যার চেস্টা করে। এখন আমি ঢাকা হাসপাতাল এ জীবন যুদ্ধ করে যাচ্ছি। জননেত্রীর কাছে এর সঠিক বিচার চাই। যারা আমাকে যখম করেছে তাদের নামঃ আইয়ুব আলি, আবুল খায়ের, ইলিয়াস, মিজান, আতিক, সলেমান, সোহাগ, জহির, খালেক, আলমগীর, নবী, হুমায়ুন সহ আরও নাম না জানা অনেকে।
উল্লেখ্য বুধবার গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আবুল কালাম জেহাদী (৭০) নামের এই মুক্তিযুদ্ধাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের ফেলনা গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেলনা পূর্ব পাড়া ও মোল্লা বাড়ির লোকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১ ঘটিকায় পূর্বপাড়ার লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বীর মুক্তিযুদ্ধা আবুল কালামের বাড়িতে হামলা করে। এসময় বাড়িতে একা পেয়ে তাকে উঠিয়ে নিয়ে বাড়ির পাশ্ববর্তী পেঁচাইমুড়ী সংলগ্ন ব্রীজের উপর নিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে মারাতœকভাবে আহত করে। কোপের আঘাতে মুক্তিযুদ্ধা জেহাদীর একটি পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এসময় মুক্তিযুদ্ধাকে মৃত ভেবে তার দেহটি রেখে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। পরে মুক্তিযুদ্ধার ছেলে মামুন ও স্থানীয়রা খবর পেয়ে ব্রীজের একপাশ থেকে মুক্তিযুদ্ধা জেহাদীকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌদ্দগ্রাম সরকারী হাসপাতাল ও পরে অবস্থা বেগতিক দেখে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় মুক্তিযুদ্ধার পরিবার।
উল্লেখ্য মোল্লাবাড়ির আব্দুল নামে এক যুবক পাশ্ববর্তী পূর্বপাড়ার আব্দুল মান্নান মরনের মেয়েকে জোরপূর্বক প্রেমের প্রস্তাব ও বিরক্ত করে আসছিল। এর প্রেক্ষিতে ছেলে ও মেয়ের পরিবার বিচার-শালিষের মাধ্যমে মিমাংশায় বসে। শালিষে ছেলে মেয়েকে আর ডিস্ট্রার্ব করবেনা মর্মে বিচারকদের নিকট অঙ্গীকার করে এবং অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর প্রদান করে। বিচারের শেষ পর্যায়ে আব্দুলের বড়ভাইকে প্রতিপক্ষের নিকট মাপ চাওয়ার অনুরোধকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষ বিবাধে জড়িয়ে পড়ে। উক্ত বিবাধ তাৎক্ষনিক হাতাহাতিতে রুপ নেয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গত বুধবার বিকেলে পাশ্ববর্তী দেড়কোটা বাজারে পূর্বপাড়ার কয়েকজন যুবক মোল্লা বাড়ীর একটি ছেলেকে উস্কানি মূলক কথা বলে। উস্কানির প্রেক্ষিতে মোল্লাবাড়ির বেশ কয়েকজন যুবক পূর্বপাড়ার লোকদের উপর হামলা করে। এ ঘটনায় পূর্বপাড়ার আতিকুর রহমান, হাশেম মিয়াজীর পুত্র, আবুল কালাম মিয়াজীর পুত্র, মোল্লাবাড়ির নজির মোল্লার ছেলে বাপ্পি, একই বাড়ির রাকিবসহ দুই পক্ষের ৭-৮জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে আবুল কালাম মিয়াজীর ছেলেকে কুমিল্লায় ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে একইদিন গভীর রাতে পূর্বপাড়ার লোকজন প্রতিশোধ পরায়ন কয়ে মোল্লাবাড়িতে হামলা করে বাড়িঘর ভাংচুর করে এবং জেহাদীকে তুলে নিয়ে আহত করে।